ঢাকা , সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২৫ , ২২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কাঁপছে উত্তররঞ্চল : ঠাণ্ডা বাতাসে ঝরছে বরফ শীতল কুয়াশা

ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় : ০৩-০১-২০২৫ ০৬:৫২:১০ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৪-০১-২০২৫ ১০:৪১:৪১ পূর্বাহ্ন
কাঁপছে উত্তররঞ্চল : ঠাণ্ডা বাতাসে ঝরছে বরফ শীতল কুয়াশা ​সংবাদচিত্র : সংগৃহীত
গত কয়েকদিন ধরেই সারা দেশে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। দেশের উত্তরের রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, নওগাঁ, কুষ্টিয়া জেলা এবং রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বাতাসে বেড়েছে আদ্রতা। কমেছে তাপমাত্রা। ঠান্ডা বাতাসে ঝরছে ভরফ শীতল কুয়াশা। ফলে জনজীবনে নেমে এসছে ব্যাপক ভোগান্তি। বিপাকে পড়েছেন নিন্ম আয়ের মানুষ। এছাড়াও শীতের কারণে বেড়েছে বিভিন্ন রোগব্যাধিতে আক্রান্তের পরিমাণ। প্রতিদিনই জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। শুক্রবার (৩জানুয়ারি) বাংলাস্কুপের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-

পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান- নতুন বছরে পৌষে পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা নামল ৮ ডিগ্রির ঘরে। এ তাপমাত্রায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছে উত্তরের হিমালয়কন্যা পঞ্চগড়। চলতি শীত মৌসুমে ঘন কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহের দাপটে বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে উত্তরের এ জেলায়। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন সকাল ৯টায় এ অঞ্চলে তাপমাত্রা রের্কড হয়েছে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২ জানুয়ারি সকাল ৯টায় রেকর্ড হয়েছে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। গত ১৮ ডিসেম্বর তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত টানা ছয় দিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়েছে এ জেলায়। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ বলেন, আজকেও ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে উত্তরের এ জেলা। শুক্রবার ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও গত ১৩ ডিসেম্বর তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছিল। ১৩ ডিসেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত টানা ছয়দিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছিল এ জেলায়।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান- উত্তরের সীমান্ত জেলা কুড়িগ্রামের উপর দিয়ে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। শীতের দাপটে ব্যাহত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে পথ-ঘাট ও প্রকৃতি। হাড়কাঁপানো কনকনে ঠান্ডায় শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা পড়েছেন বিপাকে। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। গত দুইদিন সূর্যের উত্তাপ না থাকার কারণে সন্ধ্যার পর থেকেই হিমেল বাতাসে তাপমাত্রা আরো নিম্নগামী হওয়ায় তীব্র শীত অনুভূত হয়। তবে আজ সকাল ১০টার দিকে সূর্যের দেখা মেলায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে জনজীবনে। কুড়িগ্রাম আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, “কুড়িগ্রামে বেশ কয়েকদিন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করার পর আজ জেলা জুড়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। যা আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে।”

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান- বছরের শুরুতে দ্বিতীয় দফায় শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছে চুয়াডাঙ্গা। একদিনের ব্যবধানে জেলার তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ। শীতের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে কর্মজীবী মানুষের ওপর। হাড় কাঁপানো শীত ও কুয়াশার মধ্যেই তাদের কর্মস্থলে ছুটতে হচ্ছে। আলু ক্ষেত ও ধানের বীজতলা রক্ষায় বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে জেলার কৃষি বিভাগে। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা কমে হয়েছে ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান বলেন, মাঝে কিছুদিন বিরতি দিয়ে জেলার ওপর দিয়ে আবারও শৈত্যপ্রবাহ বইতে শুরু করেছে। এ অবস্থা আরও কয়েক দিন চলতে পারে।

লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান- শীতের তীব্রতা বেড়ে লালমনিরহাটে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চারদিকে ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত জনজীবন। বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। অনেক জায়গায় জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। গত তিনদিন পর সূর্যের দেখা মিললেও তাতে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। সবশেষ শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ৭টায় লালমনিরহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক রকিব হায়দার বলেন, শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় জেলার বিভিন্ন এলাকায় অসহায় ছিন্নমূল মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ চলছে।

রংপুর প্রতিনিধি জানান- রংপুর বিভাগের আট জেলায় হাড় কাঁপানো শীত নেমেছে। তাপমাত্রা নেমে এসেছে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সেই সঙ্গে হিমেল বাতাস শীতের তীব্রতা বহু গুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। জনজীবন একেবারে অচল হয়ে পড়েছে। প্রচণ্ড শীতে জনজীবন জবুথবু অবস্থা।
রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় জেলায় তেুঁলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপরেই রয়েছে ঠাকুরগাঁও য়ে ৯ ডিগ্রি, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি, রংপুরে ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি, নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি, দিনাজপুরে ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি, নীলফামারীর ডিমলায় ১১ ডিগ্রি, লালমনিরহাটে ১০ ডিগ্রি ও গাইবান্ধায় ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। 

বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ